শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় এবং শ্বাসকষ্ট হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন

ভূমিকা:

বর্তমান সময়ে দূষিত পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষজন নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিনিয়তই অসুস্থতার হার বেড়েই চলেছে। তেমনি করে বর্তমানে মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্টের হারও বেড়েই চলেছে। কিন্তু আমরা অনেকেই শ্বাসকষ্টের সাধারণ চিকিৎসা সম্পর্কে জানিনা।

শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়
শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

এই পোস্টে কীভাবে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

শ্বাসকষ্ট

সহজ অর্থে শ্বাসকষ্ট বলতে শ্বাস-প্রঃশ্বাসের সমস্যাকে বোঝায়। অর্থাৎ যখন স্বাভাবিকের তুলনায় শ্বাস নিতে বেশী সমস্যা অনুভূত হবে তখন সেই অবস্থাকে শ্বাসকষ্ট বলা হয়। শ্বাসকষ্ট একটি মারাত্নক ব্যাধী। শ্বাসকষ্ট হলে মানুষ ও প্রানী উভয়েরই প্রাণের ঝুকি থাকে। তাথক্ষণিকভাবে একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে।

 

শ্বাসকষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

শ্বাসকষ্ট একটি প্রাণঘাতি ব্যাধী। শ্বাসকষ্টের কারণে মানুষের মৃত্যু ঝুকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়। তবে পরিকল্পিত জীবনযাপনের মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা শ্বাসকষ্ট রোধ করতে পারিঃ

  1. ধূমপান ত্যাগ:ধূমপান আমাদের ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায়। তাই শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে অবশ্যই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
  1. ব্যায়াম করা:নিয়মিত ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস আপনার ফুসফুস এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। এতে করে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।
  1. ওজন নিয়ন্ত্রন:আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে পারেন তাহলে এটি আপনাকে একটি সুন্দর ও সুস্থ জীবন পরিচালনায় সহায়তা করবে। অনিয়ন্ত্রিত ওজন আপনার স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বাধাপ্রাপ্ত ঘটায় পাশাপাশি এটি আপনার শ্বাসকষ্টের একটি বড় কারণ হিসেবে দাড়াতে পারে। তাই শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে ওজন নিয়ন্ত্রন গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে থাকে।
  1. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা:নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনি আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকাংশেই হ্রাস করতে পারবেন। ডায়াফ্রাম্যাটিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো ব্যায়ামগুলো করার মাধ্যমে শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।
  1. মাস্ক ব্যাবহারঃযানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোয়া ও দূষিত পরিবেশের কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। আর শিল্পায়নের কারণে পরিবেশে অনেক ধূলো-বালি ভেসে বেড়ায়। যা আমাদের নাকে প্রবেশ করে আমাদের শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাড়ায়। তাই এসব ধূলো-বালি থেকে বাচতে বাহিরে যাওয়ার সময় সবসময় মাস্ক ব্যাবহার করার চেষ্টা করতে হবে। এতে আপনার শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

 

আরও পড়ুন: ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ

 

শ্বাসকষ্ট হলে কি ঔষধ খেতে হবে

ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন কারণে আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। শীতকালে মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের ফুসফুসজনিত সমস্যার কারণেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। উক্ত সমস্যা দেখা দিলে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত। শ্বাসকষ্টের জন্য ডাক্তারগণ সাধারণত যেসকল ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন সেগুলোর তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • Dexoven 200
  • Brodil 4
  • Salmolin (Inhaler)
  • Bexitrol (Inhaler)
  • Monas 10
  • Doxiva 200
  • Fenadin 120

বিঃদ্রঃ- বিভিন্ন কারণে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। তাই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পর যেকোনো ঔষধ খাওয়া উচিত।

 

হঠাৎ শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক চিকিৎসা

পরিবর্তিত জলবায়ু এবং দূষিত পরিবেশের কারণে আমাদের মধ্যে অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে শ্বাসকষ্টের সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। নানা কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তবে এটির উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই যদি সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা যায় তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শ্বাসকষ্টের সমস্যাটি হঠাৎ দেখা দিতে পারে। তাই তাথক্ষণিকভাবে শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা জরুরী। নিচে শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কয়েকটি উপায় তুলে ধরা হলো:

  1. একটা চেয়ারকে সাপোর্ট হিসেবে ব্যাবহার করে ঝুঁকে থাকলেও এই সমস্যার থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  2. হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে মাথার নিচে বালিশ দিয়ে মাথার দিকটা উচু করে পা ভাজ করে রেখে কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। এটি করলে কিছুটা আরাম পাওয়া যাবে।
  3. দেয়ালের কাছে থেকে অল্প সামান্য দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাড়ালে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  4. এসময় হালকা গরম পানীয় যেমন: চা, কফি কিংবা গরম পানি পান করলে আরাম পাওয়া যাবে।

প্রাথমিক চিকিৎসায় সমস্যার সমাধান না হলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের সরণাপন্ন হতে হবে।

শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

 

শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না

শ্বাসকষ্টের রোগীদের খাদ্যাভ্যাস এ অত্যান্ত সতর্কতার সাথে মেনে চলতে হবে। কিছু খাবার আছে যা শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে আবার কিছু খাবার আছে যা শ্বাসকষ্টের সমস্যাকে নিরাময় করতে সহায়তা করে থাকে। একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না তা নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. হাপানি বা শ্বাসকষ্টের সাথে অ্যালার্জির একটা গভীর সম্পর্ক আছে। মূলত অ্যালার্জির ফলেই হাপানি বা শ্বাসকষ্টের শুরু হয়। তাই একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য যেসব খাবার খেলে অ্যালার্জির সূচনা হয় সেসব খাবার গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

২. অবশ্যই প্রিজারভেটিভ যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এসব খাবারে সালফাইটের পরিমাণ বেশি থাকে। আর একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য সালফাইট খুবই ক্ষতিকর একটা উপাদান।

৩. ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ ঠান্ডা খাবার খাওয়ার ফলে আপনার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে।

৪. আমাদের মধ্যে অনেকেরই ডিম খেলে অ্যালার্জি দেখা দেয়। এছাড়াও গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, মিষ্টি কুমড়া, হাসের মাংস, বেগুন ইত্যাদি খাবারে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। তাই একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য এসব খাবার খাওয়া উচিত নয়।

৫. চিংড়ি মাছে অনেকেরই অ্যালার্জি রয়েছে। চিংড়ি মাছ একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য খাওয়া উচিত নয়।

 

শ্বাসকষ্ট হলে কি খেতে হবে

শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তারগণের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের পাশাপাশি অন্যান্য কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শ্বাসকষ্টের সমস্যার অনেক উন্নতি করতে পারি। এসব খাবার আপনার ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। একজন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য যেসব খাবার খাওয়া উচিত সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  • প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খেতে হবে
  • আপেল
  • গাজর
  • সামুদ্রিক মাছ
  • রসুন
  • আদা চা
  • মধু
  • কলা
  • ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
  • ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার
  • ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

লেখকের শেষ কথা

শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।

আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

শ্বাসকষ্ট সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি শাহরিয়ার জামান (আবির) পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং জামান আইটি ২৪ এর CEO।

Leave a Comment