হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন
ভূমিকা
এই পোস্টে আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা, আলু দিয়ে রূপচর্চা, আলুর রসের ফেসপ্যাক ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
প্রাচীনকাল থেকে মানুষ ত্বকের রূপচর্চা করে আসছে। সবাই চায় যে তাদের ত্বক যেন অনেক সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়। ত্বকের প্রতি যত্নশীল বেশিরভাগ মেয়েরাই কারণ মেয়েরা তাদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য রূপচর্চার কাজে বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে থাকেন। যদি ত্বকের যত্ন না করা হয় তাহলে তো ধীরে ধীরে অনেক খারাপ হতে শুরু করে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর এভাবে ত্বকের অযত্ন করলে কিছুদিনের মধ্যেই বয়স অল্প থাকা অবস্থায়ও ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যায়। তাই ত্বকের ব্যাপারে প্রতিটা মানুষেরই যত্নশীল হওয়া উচিত। যত্ন ছাড়া পৃথিবীর কোনো কিছুই সুন্দর থাকেনা।
কারন আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৌন্দর্যের প্রতীক বানিয়েছেন। আর সেজন্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের ত্বকের যত্ন নেবার জন্য প্রকৃতিতে বিভিন্ন উপকরণ সৃষ্টি করেছেন, যার দ্বারা আমরা ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধান করতে পারি। আমাদের শুধু একটু চেষ্টা থাকতে হবে, সে সকল উপকরণগুলো খুঁজে নেবার চেষ্টা। এখন আমি আপনাদের আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানাবো। আপনারা পোস্টটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়লে আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
প্যাক তৈরিঃ একটি আলু গ্রেটার দিয়ে গ্রেট করে অথবা ব্লেন্ডারে রস বের করে নিন। এরপর একটি পরিষ্কার পাত্রে রসগুলো ঢেলে নিন। সেই আলুর রসের সঙ্গে ২ চা-চামচ কর্নফ্লাওয়ার, হাফ চা-চামচ বেসন, ১ চা-চামচ মধু , হাফ চা-চামচ হলুদ গুঁড়া ও হাফ চা-চামচ লেবুর রস একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে, মিশ্রনটি সমস্ত ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর ত্বক ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, শীতের সময় হলে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করে দেখুন আপনাদের ত্বক কতটা ফর্সা হয়। ভালো ফলাফল পেতে আপনারা অবশ্যই নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা
আলু খাওয়ার উপকারিতা
উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ আলুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। কেননা আলুতে রয়েছে , ভিটামিন-এ, অ্যান্টি-অক্সাইড, আয়রন, পটাশিয়াম, ফাইবার সহ প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। আলু আপনাদের শরীরের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে ভীষণভাবে কার্যকারি। কারণ আলুর ভেতরে রয়েছে কোকোয়া-মাইনস নামের এক ধরনের কেমিক্যাল। কিন্তু এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খাবেন না কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে আপনাদের শরীরের চিনি বা সুগারের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে আপনাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে। তাই কোনো কিছু অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
ওজন বাড়ায়ঃ আপনাদের মধ্যে অনেকের ওজন কম। তাদের জন্য আলু ভীষণ উপকারি। কারণ আলুতে যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে তা আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে ভীষণভাবে সহায়তা করে। আলু ওজন বাড়াতে কার্যকারি ভূমিকা পালন করে।
পেট জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তিঃ আলুর মধ্যে ভিটামিন বি-৬, পটাশিয়াম, এবং ভিটামিন-সি থাকে যা আমাদের শরীরের পাচক তন্ত্রের প্রদাহ থেকে তৈরি করে। যা পেট জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বাতে ব্যাথা এবং আর্থ্রাইটিস তাদের জন্য আলু ভীষণ উপকারি।
আলু খাওয়ার অপকারিতা
- অতিরিক্ত আলু খাওয়ার ফলে আপনাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
- যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা আলু খাবেন না কেননা আলুতে প্রচুর পরিমাণে সুগার রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর।
- আপনারা সবুজ আলু খাবেন না কারণ সবুজ আলুতে ৩ অ্যালকালয়েড যেমন: চ্যাকোনিন, সেলোনিন এবং আর্সেনিক থাকায় আমাদের শরীরে রাসায়নিক বেড়ে যায়। আর অতিরিক্ত রাসায়নিক শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর এবং মারাত্মক হতে পারে।
- আপনারা অনেক সময় অর্ধেক ভালো এবং অর্ধেক পচা আলুগুলো খেয়ে থাকেন। এগুলা খাবেন না কারণ এগুলোতে বিষক্রিয়া হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত আলু খাবেন না, যদি খেতেই হয় তাহলে বেশি করে ফ্রাই করে খাবেন কারণ আলুতে সুগার থাকার ফলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস এর সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস দেখা দিলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
- আলু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য হারিয়ে যেতে পারে এতে ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।
আলু দিয়ে রূপচর্চা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যে, আলু শুধু সবজি হিসেবেই খেয়ে থাকেন। কারণ আলু ভাতের চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং আলো তরকারি হিসেবেও ভাতের সঙ্গে খেয়ে থাকেন। এখন রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন রকম সুস্বাদু খাবার এই আলু দিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে আলু আমাদের ত্বকের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের কাছে শুনতে অবাক লাগলেও এটা আমাদের মেনে নিতে হবে যে ত্বকের যত্নে আলুর কোনো বিকল্প নেই। তাই এবার আমি আপনাদের আলু দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করবেন সে বিষয়ে জানাবো।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে: চোখের নিচের কালো দাগ আমাদের মধ্যে প্রায় অনেক মেয়েদেরই এই সমস্যা থাকে। আর চোখের নিচে কালো দাগ হলে চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে আলুর রস ভীষণভাবে কার্যকারী। একটি আলু অর্ধেক করে নিয়ে গ্রেট করে নিন এবং যতটুকু আলু নিয়েছেন ততটুকু শশা কুচি নিয়ে নিন। এবার আপনাদের চোখের নিচে এবং উপরে ১৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন এভাবে ব্যবহারে আপনাদের চোখের নিচের কালো দাগ অনায়াসে দূর হয়ে গেছে। আপনারা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করুন তাহলে আপনারা ফলাফল পেয়ে যাবেন।
রোদে পোড়া দাগ কমাতে আলুর ব্যবহার: ছেলে অথবা মেয়ে সবারই ত্বকে রোদে পোড়া দাগের সমস্যা হয়ে থাকে। কারণ কাজের ক্ষেত্রে প্রতিটা মানুষকেই বাইরে বের হতে হয়। এর ফলে ত্বকে রোদে পোড়া দাগ হয়ে যায়। আর এই রোদে পোড়া দাগ কমাতে আলু ভীষণভাবে উপকারি। আপনি কিছু আলু গ্রেট করে অথবা কুরে নিবেন এরপর একটি সুতির কাপড় দিয়ে চেপে চেপে আলুর রস বের করে নিবেন। তার সাথে হাফ চা-চামচ হলুদ গুঁড়া এবং এক চা-চামচ বেসন দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন । এবং ১৫ মিনিট পর ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনারা বিকেলে অথবা সন্ধ্যার পর লাগাবেন তাহলে বেশি উপকার পাবেন এভাবে আপনারা ২ মাস ব্যবহার করে দেখুন আপনাদের ত্বকের রোদে পোড়া দাগ ভালো হয়ে যাবে।
আলুর রসের ফেসপ্যাক
আলু দিয়ে আপনারা বিভিন্নভাবে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। আমি আপনাদের আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানিয়েছি। এবার আমি আপনাদের আলুর রসের ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম জানাবো। আমি আপনাদের সাথে আলু দিয়ে একটি ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম জানাবো যা আপনারা হাত-পা গলা ও ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ও কোমল এবং ত্বক কাচের মত চকচকে করতে সহায়তা করবে। তাই আপনারা আলুর রসের ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম জানতে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আলুর রসের ফেসপ্যাক তৈরির নিয়ম: দুইটি আলু ভালোভাবে গ্রেট করে নিন অথবা ব্লেন্ডার করে নিতে পারেন। তারপর একটি সুতির কাপড় অথবা ছাকনি দিয়ে রসটা বের করে ফেলুন। এবার একটি ছোট পাতিল গ্যাসের চুলার ওপর দিয়ে আলুর রস ঢেলে দিন, এরপর আলুর রসটি ফুটে যাবার সাথে সাথে তার সঙ্গে, ১ চা-চামচ লেবুর রস ,১ চা-চামচ মধু ও ১ চা-চামচ কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে একটু নেড়ে নিন।
তারপর পাতিলটি নামিয়ে নিন, মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি বাটিতে করে ১ ঘন্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিন। ১ ঘন্টা পর নরমাল ফ্রিজ থেকে বের করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার যেখানে যেখানে আপনার কালো দাগ রয়েছে এবং ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট শুকিয়ে নিন। ২০মিনিট পর ত্বক হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে লাগানোর পর অবশ্যই আস্তে আস্তে ম্যাসেজ করবেন এভাবে ব্যবহার করলে আপনারা অবশ্যই উপকারিতা পাবেন। এই প্যাকটি আপনি ব্যবহার করে দেখুন অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।
লেখকের শেষ কথা
আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।
আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
আলু সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন