হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন
ভূমিকা:
আমাদের উচিত মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানা। আর এই কালো দাগ যদি ঘরোয়া পদ্ধোতিতে দূর করা যায় সেই সম্পর্কে পোস্টে আলোচনা করা হলো।
মুখের কালো দাগ দূর করার কিছু টিপসঃ
- মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য মধু, লেবু, গোলাপ ফুলের পাতা অনেক কার্যকরী উপাদান হিসেবে কাজ করে। আপনি যদি নিয়মিত ব্যবহার করেন এক সাপ্তাহের মধ্যেই তার ফলাফল পেয়ে যাবেন। আপনারা এই উপাদান গুলি পেস্ট করে এক সাপ্তাহ ফেইসে লাগাবেন দেখবেন অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
- মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য আপনি ডিমের কুসুমের সাথে অলিভ অয়েল আর লেবুর রস দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
- প্রথমে শুকনো হলুদের গুড়ার সঙ্গে দেশি ঘি মেশান। তারপরে মিশ্রিত গুড়া মুখের যে খুঁত বা দাগ গুলো আছে তার ওপর আলতো ভাবে লাগান। এবারে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে পরিপূর্ণভাবে দাগ দূর করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: নিম পাতা বেটে মুখে দেওয়ার উপকারিতা
রাতে রূপচর্চার কিছু টিপসঃ
ব্যস্ত এই সময়ে নিজের যত্ন কতটুকুই বা নেয়া যায়। পরিবারের গৃহিণীদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় সেই সকালেই। আর কর্মজীবী নারীদের তো সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরেও কাজের শেষ নেই, সংসার দেখাশোনার সঙ্গে সঙ্গে পরের দিনের অফিসের কাজের প্রস্তুতি নিতে নিতেই ঘুমের সময় হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা আরও বেশি ব্যস্ত, সারা দিন নিজের দিকে একটু তাকানোর সুযোগটা কোথায়? ফলাফল ত্বক ও চুলের নানাবিধ সমস্যা! কোন মেয়েরই না নিজের যত্ন নেয়ার ইচ্ছা থাকে! অভাব শুধু সময়ের। এই যখন অবস্থা, তখন এর আদর্শ সমাধান হতে পারে ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার আগের সময়টুকুতে রূপচর্চার কাজটুকু সেরে ফেলা।
এ প্রসঙ্গে গ্রেট লুক বিউটি পার্লার ও হারবাল কেয়ার- এর রূপ বিশেষজ্ঞ হাসিনা মমতাজ বলেন, মৌলিক কিছু পরিচর্যা রয়েছে, যা প্রতিদিনই মেয়েদের করা উচিত। এই নিয়মিত যত্নটুকু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন রাতে নিজের পরিচর্যা করে ঘুমালে জীবনভর সুস্থ-সুন্দর থাকা সম্ভব। সুন্দর ত্বকের মূলমন্ত্রই হলো পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা। ত্বকের ময়লা ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে পিম্পল, ব্রণ হতে পারে।
যত্নের অভাবে ত্বক হয়ে পড়ে খসখসে, রুক্ষ, অমসৃণ। তাই রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ঘুমালে সারা রাতে ত্বক একেবারে তরতাজা থাকবে। তবে সবকিছুর আগে বুঝে নিতে হবে নিজের ত্বকের ধরন নিজেই পরীক্ষা করে নিতে পারবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন নাকের দুই পাশ, গাল অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে আছে, তাহলে ত্বক অবশ্যই তৈলাক্ত।
যদি মুখ টান টান বা শুকনো থাকে তাহলে পিম্পলের তেমন প্রবণতা নেই। যদি নাক তৈলাক্ত থাকে আর বাকি মুখে টান টান ভাব থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে ত্বকের ধরন মিশ্র। তারপরও অবশ্যই কোনো বিশেষজ্ঞের পারামর্শ নিয়ে আপনার ত্বকের ধরন যাচাই করুন। ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে। ত্বকের যত্নে ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং করতে হবে ঘুমানোর পূর্বে।
ফেসওয়াশঃ
সর্ব প্রথমে রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর আপনার ত্বকের সাথে যেই ফেসওয়াস সুট করে এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। স্পর্শকাতর ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ ফেসওয়াশ।
ফেসপ্যাক
ফেসপ্যাক মুখ এর জন্য অনেক উপকারি। নিয়মিত ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে অবশ্যই আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। আর ফেসপ্যাক ঘরেই বানাতে পারবেন। আপনি শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ উপটান + ১ চা চামচ দুধের সর বা দুধ + ১ চা চামচ টকদই।
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য
মিশ্র ত্বকের জন্য লেবু,মধু ও বেসন মিশ করে ফেসপ্যাক তৈরি করে তা মুখে ব্যবহার করতে পারেন। এতে মুখের তৈলাক্ত ভাব অনেকাংশেই দূর হবে। আবার মুখে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো।
ময়েশ্চারাইজার
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকের যারা আছেন তারা ভেজা মুখে ২-৩ ফোঁটা বেবি অয়েল লাগান। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই উত্তম। ব্রণের জন্য যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ আছে, তারা প্যাক ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজারের বদলে ব্যবহার করুন অ্যাসট্রিনজেন্ট। ঘরোয়া অ্যাসট্রিনজেন্ট হলো গোলাপজল ও শসার রস।
এগুলো ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এরপর শসার রস করে আপনি ফ্রিজে বরফ জমানোর পাত্রে রেখে আইস-কিউব করে নিতে পারেন। তাহলে আপনার প্রতি রাতে রস বানানোর ঝামেলা থাকবে না। একটি কিউব মুখে ঘষে নিন। সমপরিমাণ পুদিনা পাতা ও নিমপাতা বেটে শুধু ব্রণ ও দাগের উপর লাগিয়ে ঘুমান। সকালে উঠে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। পুদিনা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ফেসপ্যাকেও। পুদিনা পাতা ও নিমপাতা ব্রণের জন্য ভীষণ উপকারী।
চোখঃ
চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়লে দেখতে অনেক খারাপ লাগে। তাই চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল কমাতে ঘুমানোর আগে কুরানো শসা বা আলু ঠাণ্ডা হলে ভালো বা ঠাণ্ডা টি- ব্যাগ চোখের ওপর দিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট।
ঠোঁটঃ
সবাই চায় ঠোঁট যেন দেখতে সুন্দর লাগে। যদি আপনি নরম গোলাপি ঠোঁটের অধিকারী হতে চান তাহলে প্রতি রাতে ভ্যাসলিনের সাথে সামান্য পরিমাণ লবণ মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষন পর তা ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ঠোঁটের মৃত কোষ ঝরে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
হাত ও পাঃ
প্রতি রাতে পা ভালোভাবে ধুয়ে লোশন লাগিয়ে ঘুমাতে যান। এছাড়া নিয়মিত যত্ন হিসেবে সপ্তাহে দুবার রাতে পা প্রথমে সাবানদিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে, ২ টেবিল চামচ কুসুম গরম অলিভ অয়েল + ১ চা চামচ লবণের মিশ্রণ তৈরি করে সেটা পায়ে ভালো করে ম্যাসেজ করুন। এতে মৃতকোষ ঝরে যাবে, গোড়ালি নরম হবে, ম্যাসেজে রক্ত চলাচল ভালো হবে। হাতের যত্নও নিতে পারেন একইভাবে। মুখ, হাত, পা যেকোনো ম্যাসেজই করতে হবে আলতোভাবে। তা না হলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।
নখঃ
নখ ফেটে বা ভাঙার সমস্যা অনেকেরই থাকে। এ সমস্যা দূর করার জন্য ঘুমানোর পূর্বে হাত ও পায়ের নখে অলিভ অয়েল দিয়ে ঘুমান। এতে সারা রাত নখ ভিজে থাকবে ফলে নখ ফেটে বা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা সমাধান হবে।
খাদ্যাভ্যাসঃ
আমাদের দেশের প্রথা অনুযায়ী সবাই একত্রিত হয়ে রাতের খাবারই হয় সারাদিনের মূল ও বেশ ভারি খাবার। তাই ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খাওয়াটা বাঞ্ছনীয়। চাইলেও আলাদা করে নিজের জন্য মেয়েরা এক বাটি স্যুপ বা ফল খেতে পারেন না।
রাতের খাওয়ার মেনু বদলের ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে পরিবারের সবাই মিলে ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে খাওয়ার অভ্যাস করুন, যাতে খেয়েই শুয়ে না পড়তে হয়, যা খুব ক্ষতিকর। খেয়ে নিয়ে আধা ঘণ্টা হাঁটুন।
আরও পড়ুন: রূপচর্চায় কলার খোসার উপকারিতা
ছোটখাটো ব্যায়ামঃ
আপনার যদি জানা থাকে অন্যান্য ছোটখাটো ব্যায়াম, ইয়োগা বা মেডিটেশন করতে পারেন। তার আধা ঘণ্টা পর শুতে যান। এতে শরীর বেশ ঝরঝরে লাগবে। খাওয়ার পর খেতে পারেন এক কাপ চায়নিজ জেসমিন-টি, এতে শরীরে মেদ জমবে না।
নিয়ম মাফিক পরিচর্যা, সুষম খাবার, সুন্দর জীবনযাপন আপনাকে সুস্থ রাখবে। আর সুস্থতা প্রতিফলিত হবে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যে। তাই আপনার বিরামহীন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ঘুমের আগে এটুকু ঘরোয়া পরিচর্যায় আপনি থাকবেন একদম সুস্থ, প্রাণবন্ত,সুন্দর।
লেখকের শেষ কথা
মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।
আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
মেয়েদের মুখের কালো দাগ দূর করার ক্রিম সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন