ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা – লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন

ভূমিকা

ড্রাগন একটি বিদেশি ফল যা বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে চাষাবাদ হচ্ছে। আগে এই ফলকে আমদানি করে আনা হতো এখন আমাদের দেশে চাষ করে বাজারে আনা হচ্ছে। ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের পোস্টে জানতে পারবেন এবং লাল ড্রাগন  ফলের উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা, ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়, ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম সহ আমি আপনাদের জন্য এই পোস্টে আরও কিছু টিপস রেখেছি। তাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ড্রাগন ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড় ও দাঁতের গঠনে কাজ করে। ড্রাগন ফল প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য, এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়। ড্রাগন ফলের মধ্যে পটাসিয়াম, ফ্যাট রয়েছে যা শরীরের জন্য উপকারী।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা

ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে ও ওজন কমানো যায়। যাদের হার্টের সমস্যা তারা ড্রাগন ফল খেলে হার্টের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসে। ড্রাগন ফলে এমন পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের র্দীঘমেয়াদী সমস্যা ভালো করে। ডায়বেটিস ঝুঁকি কমায় ড্রাগন ফল নিয়মিত খেলে। আবার যাদের হজমের সমস্যা সেটাও নিরাময় করে ড্রাগন ফল।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফলে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাঁড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য প্রথমে ফলটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর মাঝখান বরাবর দুই ফাঁক করে কেটে নিতে হবে। চামচ দিয়ে ভেতরে নরম অংশ কেটে তুলে নিতে হবে তারপর খাওয়া যাবে।

ড্রাগন ফল কোনো কিছুর সাথে মিশিয়ে খাওয়ার দরকার নেই। এটা এমনি খাওয়া যায় অন্য ফলের মতো। ড্রাগন ফল বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি ফল বাংলাদেশের বাজারে। এই ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, ফাইবার, ভিটামিন-সি, প্রোটিন, ফ্যাট, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।

অন্যান্য ফল সাধারণ যেভাবে খায় এই ফলও সাধারণ সেভাবেই খাওয়া যায়। ড্রাগন ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন র্দীঘমেয়াদী রোগের সাথে লড়াই করতে পারে। এই ফল খাওয়া শরীরের জন্য অনেক ভালো। ফলের মধ্যে থাকা প্রোটিন দেহে সারাদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে।

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা

ড্রাগন ফলের খোসার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের অনেক রোগের জন্য লড়াই করে। আমরা ড্রাগন ফলের ভেতরের অংশ খাই কিন্তু বাইরের অংশ আমরা ফেলে দেই। খোসাটার অনেক গুনাগুণ রয়েছে যা আমরা জানি না। আমাদের আজকের পোস্ট থেকে ড্রাগন ফলের খোসা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ড্রাগন ফলের খোসা যে অনেক রোগের উপসম হতে পারে। ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা রয়েছে। চলুন এবার জেনে আসি কিভাবে ড্রাগন ফলের খোসা ব্যবহার করতে হবে। ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর খোসাকে টুকরো করে কাটতে হবে। প্যানে ২৫০ মিলি পানি দিয়ে গরম করতে হবে।

পানি যখন ফুটে যাবে তখন পানির মধ্যে ড্রাগন ফলের খোসা গুলোকে ফুটন্ত পানিতে দিয়ে গরম করতে হবে। তারপর খোসা থেকে পানির রং লাল হয়ে যাবে। ৩ মিনিট পর পানি নামিয়ে নিতে হবে। পানির রং লাল হয়ে যাবে এবং পানিতে একটু লবণ বা চিনি মিশিয়ে খেলে জুসের মতো মনে হবে। খুব উপকারী ড্রাগন ফলের খোসার জুস।

এবার আপনাদেরকে জানিয়ে দিবো এই জুস খেলে কি উপকার হয় শরীরের। যারা শরীরের ফ্যাট বা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য ড্রাগন ফলের খোসার জুস খুব উপকারী। এই জুসে খেলে যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে এবং নিয়মিত ৭ দিন যদি এই খোসার জুস খাওয়া হয় তাহলে ওজন কমার পরিবর্তন দেখতে পাবেন এবং হার্টের সমস্যায় আরাম পাবেন।

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • ড্রাগন ফলের মধ্যে প্রোটিন থাকে যা শরীরের বিপাকীয় কাজে ভূমিকা রাখে।
  • ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড় মজবুত এবং শক্ত করে।
  • ড্রাগন ফলের খোসার জুস খেলে ওজন কম হয়।
  • ড্রাগন ফলের মধ্যে এমন পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের র্দীঘমেয়াদী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
  • ড্রাগন ফলের মধ্যে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজমে সহায়তা করে।
  • ড্রাগন ফলে ভিটামিন-বি৩ থাকে যা শরীরে রক্তের কোলেস্টোরল কমায় যা বড় রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • ড্রাগন ফলের মধ্যে ভিটামিন-সি রয়েছে যা ত্বককে মৃসণ করে ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ড্রাগন ফলের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ফাইবার সমৃদ্ধ: গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ গর্ভাবস্থায় প্রায় প্রতিটা নারী কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগে। যার ফলে তাদের অনেক সমস্যা হয় এবং ড্রাগন ফল খেলে শরীরের উপকার হয় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়ে যায়। এজন্য এই সময় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে গর্ভবতী নারীকে।

কার্বহাইড্রেট উৎস: ড্রাগন ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ কার্বহাইড্রেট থাকে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। মায়ের ও শিশুর বৃদ্ধির জন্য ড্রাগন ফল খেতে হয়। এই ফলের কার্বহাইড্রেট এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে গর্ভবস্থায়।

ফ্যাট: গর্ভবতী নারীর জন্য ফ্যাট জাতীয় খাবার অনেক উপকারী। শিশুর বৃদ্ধি ও শিশুর বিকাশের জন্য ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ানো উচিত। ড্রাগন ফলের উপকারিতা রয়েছে।

পুষ্টিকর: ড্রাগন ফলের মধ্যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার মধ্যে ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদি রয়েছে যা পুষ্টি সরবরাহ করে শরীরে। এটি গর্ভবতী নারীর জন্য ভালো।

ড্রাগন ফলের অপকারিতা 

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণে যেমন শরীর উপকার হয় তেমনি এই ফলের অপকারও রয়েছে। ড্রাগন ফল বেশি খাওয়ার ফলে পেট ফুলে যায়, ডায়রিয়া দেখা দেয়, হজমে সমস্যা হয়। এই ফলের মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে যার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবেনা।

অজৈব ড্রাগন ফল কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ বহন করতে পারে। ফলটি তোলার পর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এই ফলের স্বাদ কম আবার ফলের মূল্য বেশি হয় যার ফলে সহজে কেউ কিনতে পারেনা। এই ফল বিদেশি তাই সহজে ফলটি পাওয়াও যেত না। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে বানিজ্যিকভাবে চাষ হওয়ায় অনেকটাই সহজলভ্য হয়েছে।

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ড্রাগন ফলের নানা জাত এখন পাওয়া যাচ্ছে তারমধ্যে লাল ড্রাগন ফলটি বাংলাদেশে বেশি আমদানি করা হয়। আমদানি করা ফলটি অনেকে পছন্দ করছে। লাল ড্রাগন ফলটি হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। লাল ড্রাগন ফল হজমে সমস্যা থাকলে তা নিরাময় করে।

লাল ড্রাগন ফল খেলে যাদের উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টোরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে। লাল ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে আয়রন এটি রক্তশূন্যতা দূর করতে পারে। লাল ড্রাগন ফলে আয়রন আছে যা গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় তাই ঐ সময় লাল ড্রাগন খেলে আয়রনের ঘাটতি মেটাবে।

শরীরে রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে লাল ড্রাগন। লাল ড্রাগন বাংলাদেশে বেশি আমদানি করে আনা হয় এবং এই লাল ড্রাগন ফলটি দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হয়। এই ফলের প্রচুর উপকারিতা রয়েছে।

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়

ড্রাগন ফল এখন বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় ফল কারণ এটি বিদেশি একটা ফল। এই ফলেরও বিভিন্ন জাত রয়েছে। লাল ড্রাগন ফল বেশি পাওয়া যায় আমাদের দেশে। এই ড্রাগন ফলটি দেখে মনে হয় কিভাবে খায় স্বাদ কেমন হয় নানা রকম প্রশ্ন কারণ ফলটি নতুন আমাদের দেশে। লাল ড্রাগন ফলে স্বাদ তেমন একটা পাওয়া যায় না।

ফলটি খেতে তেমন ভালো না লাগলেও ফলটি প্রচুর পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রথমে ড্রাগন ফল ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর ফলের মুখের সামনে ও পিছনের অংশ কেটে নিতে হবে। এরপর মাঝ বরাবর কেটে দুই ফাঁক করতে হবে।

তারপর এর মাঝে থেকে যে সাদা অংশ আছে সেটা চামচ দিয়ে তুলে সরাসরি খাওয়া যাবে। আবার ছোট ছোট টুকরো করে খাওয়া যায় স্বাভাবিক নিয়মে। এটার জন্য আলাদা কোন কিছু করার দরকার পড়েনা। এই ফলের অনেক উপকার পাওয়া যাচ্ছে আর নতুন ফল হওয়ায় এই ফলের চাহিদা অনেক দেশে।

 

লেখকের শেষ কথা

ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।

আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

ড্রাগন সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি শাহরিয়ার জামান (আবির) পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং জামান আইটি ২৪ এর CEO।

Leave a Comment