বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সঠিক সময়- বাচ্চাদের দাত ওঠার লক্ষণ

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সঠিক সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে বাচ্চাদের দাত ওঠার সঠিক সময় সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সঠিক সময়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় হয়ে যায় কিন্তু পিতা-মাতারা এই বিষয়গুলো বুঝতে পারেন না। সাধারণত তাদের দাঁত ওঠার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে তেমনভাবে ধারণা থাকে না। অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা এই সময় অনেক বেশি জেদি হয়ে যায় এবং কান্নাকাটি করে। আমাদের ভুল বুঝার কারণে সাধারণত আমরা সেটি বুঝতে পারি না, যে দাঁত ওঠার কারণে তাদের এই সমস্যাগুলো হচ্ছে।

বাচ্চাদের দাঁত

এক্ষেত্রে প্রতিটি পিতা-মাতাই যদি তাদের বাচ্চাদের দাঁত ওঠার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে একটা বিস্তারিত  ধারণা রাখতে পারে তাহলে খুব সহজেই এ সমস্যা গুলো ধরে নিতে পারবে। একজন আদর্শ পিতা-মাতা হিসেবে আমাদের অবশ্যই কখন অর্থাৎ কত বছর বয়সে বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা রাখা উচিত।

সাধারণত চিকিৎসকরা বলে থাকেন বাচ্চাদের দাঁত ওঠার উপযুক্ত সময় হলো ৬ মাস থেকে ১২ মাস এর মধ্যে। যেহেতু প্রতিটি বাচ্চার শারীরিক গঠন এক রকম হয় না তাই সবার একই সময়ে দাঁত উঠে না। কারো ৬ মাস এর পরে দাঁত উঠতে শুরু করে আবার কারো ১০ মাস আবার কারও ক্ষেত্রে এক বছর পরে গিয়ে দাঁত উঠতে শুরু করে।

তবে বেশিরভাগ বাচ্চাদের দেখা যায় যে ৬ মাসের মধ্যেই দাঁত উঠতে শুরু করে। যদি এই সময় আপনার বাচ্চা একটু অন্যরকম হয়ে যায় অর্থাৎ একটু বেশি কান্নাকাটি করে তাহলে এটা স্বাভাবিক। তাদের দাঁতে ব্যথা অনুভূত হয়, তাই তারা সাধারণত একটু বেশি কান্নাকাটি করে। যদি ৬ মাসের মধ্যে দাঁত উঠতে শুরু না করে তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। একটু দেরি হলেও সমস্যা নেই।

বাচ্চাদের দাঁত ওঠায় পিতা-মাতার করণীয়

বাচ্চাদের দাঁত ওঠায় পিতা-মাতার আবশ্যিক কিছু করণীয় রয়েছে। কারণ বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, সেই সমস্যাগুলো সমাধানের একমাত্র দায়িত্ব হলো পিতা-মাতার। আগে থেকে যদি আমাদের এই বিষয়গুলো ভালোভাবে জানা থাকে তাহলে আমরা খুব সহজে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারব। তাহলে চলুন পিতা মাতার করণীয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথম করণীয় হলো বাচ্চাদের কোন বয়সে দাঁত উঠে এই বয়স সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা রাখা। তাহলে আমরা খুব সহজেই আমাদের বাচ্চাদের সমস্যা গুলো বাঝতে পারব।
  • যদি বাচ্চারা এই সময় অনেক বেশি কান্নাকাটি করে অথবা জেদি হয়ে যায় তাহলে তাদের উপরে কখনো রাগ করবেন না। সাধারণত তাদের শান্ত করার চেষ্টা করবেন সব সময়।
  • বাচ্চারা যেই জিনিস পছন্দ করে অর্থাৎ খেলনা এবং তাদের পছন্দ অনুযায়ী খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। যেন তারা তাদের এই ব্যথাগুলো ভুলে থাকে এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
  • সাধারণত দাঁত ওঠার সময় বাচ্চারা কামড়াতে চায়। তাই তাদের হাতে নরম কোনো কিছু দিতে হবে যেন তারা সেটি কামড়াতে পারে এবং তাদের কোন ক্ষতি না হয়।
  • পিতা-মাতার উচিত যখন তাদের বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে সাধারণত তখন তাদের বেশি বেশি সময় দেওয়া। কারণ অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা এই ব্যথা সহ্য করতে পারে না যার ফলে অনেক বেশি কান্নাকাটি করে।
  • এই সময় দেখা যায় যে বাচ্চাদের মুখ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে লালা পড়তে থাকে সাধারণত এই লালা গুলি ভালোভাবে পরিষ্কার করা।

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার কিছু লক্ষণ

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণগুলো জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারব যে এই সময় বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করেছে। সাধারণত বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যেগুলো আমাদের জানা প্রয়োজন বিশেষ করে অভিভাবকদের। অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা এই সময় অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে যায় আবার অনেকের তেমন কোন সমস্যা হয় না।

  • যখন বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে সাধারণত তখন হালকা পরিমাণে জ্বর থাকতে পারে। যদি জ্বর অনেক বেশি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ওষুধ খাওয়াতে হবে এবং ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
  • যদি কোন বাচ্চার ক্ষেত্রে দাঁত ওঠার সময় প্রচন্ড পরিমাণে ব্যাথা হয় তাহলে তারা কান্নাকাটি করে। আবার অনেক বাচ্চা রয়েছে যাদের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যাথা হয় না যার ফলে তারা স্বাভাবিক থাকে।
  • এই সময় বাচ্চাদের মুখ দিয়ে অনেক বেশি লালা পড়তে থাকে। যদি হঠাৎ করে বাচ্চাদের লালা পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে তাদের দাঁত উঠতে শুরু করেছে।
  • যখন বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে সাধারণত তখন তাদের কামড়ানোর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। হাতের কাছে যা পাই তা নিয়েই কামড়াতে শুরু করে।
  • অনেক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে জেদ এবং কান্নাকাটির পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
  • যখন বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে সাধারণত তখন প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হয় যার ফলে তারা সঠিকভাবে ঘুমাতে পারে না।

বাচ্চাদের দাঁত না উঠার লক্ষণ

বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কিছু লক্ষণ রয়েছে। অবশ্যই পিতা-মাতার উচিত এগুলো সম্পর্কে অবগত থাকা। সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে এই সময়ের মধ্যেই বেশিরভাগ বাচ্চাদের দাঁত উঠতে শুরু করে। যদি এই সময়ের মধ্যে দাঁত উঠতে শুরু না করে তাহলে কিছুটা দেরি হতে পারে। তার পরেও যদি দাঁত উঠতে না শুরু করে তাহলে বুঝতে হবে অন্য কোন সমস্যা রয়েছে।

বাচ্চাদের দাঁত

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে বাচ্চাদের ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই দাঁত উঠতে শুরু করে। যদি এই সময়ের মধ্যেও দাঁত উঠতে শুরু না করে তাহলে আরো কিছু সময় ধরে অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে, যদি তাও না ওঠে তাহলে বুঝতে হবে এগুলো দাঁত না উঠার লক্ষণ।

বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ

বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার অনেকগুলো কারণ রয়েছে এবং যেগুলোর জন্য বাচ্চাদের দাঁত উঠতে দেরি হয় এমনকি অনেকের ক্ষেত্রেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও দাঁত উঠতে শুরু করে না। এই সময় পিতা-মাতাগণ অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। এখানে চিন্তার কোন কারণ নেই অনেক ক্ষেত্রেই এমনটা হতে পারে। সাধারণত এই সমস্যার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

প্রথমত যে কারণটির জন্য সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে সেটি হলো বংশগত কারণ। যদি বাচ্চাটির বংশে এরকম কোন সমস্যা থাকে তার পিতামাতা বা অন্য কারো ক্ষেত্রে এরকম হয়ে থাকে তাহলে তারও এ সমস্যাটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত এই কারণে যদি দাঁত উঠতে দেরি হয় তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ধীরে ধীরে দাঁত উঠতে শুরু করবে।

দাঁত দেরিতে ওঠার আরো একটি বিশেষ কারণ রয়েছে সেটি হলো পুষ্টিগুণের অভাব। যে সকল বাচ্চাদের শরীরে পুষ্টিগুণের অভাব রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। যদি এই কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে সম্পূর্ণ খাবার খাওয়াতে হবে। কিছু সময় এরকম সমস্যা থাকতে পারে তারপরে নিজে থেকেই দাঁত উঠতে শুরু করবে।

দাঁত দেরিতে ওঠার আরও কিছু কারণ জানতে ক্লিক করুন

বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয়

বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। বেশ কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সময় মতো দাঁত উঠতে শুরু করে না সাধারণত তখন পিতা-মাতারা অনেক ভয় পেয়ে যায়। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের করণীয় কি? এ বিষয়ে আমাদের অবশ্যই জেনে রাখতে হবে। আমরা যেহেতু বাচ্চাদের দাঁত ওঠা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি তাই এই বিষয়টি জানা অত্যন্ত জরুরী।

যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাঁত না উঠে তাহলে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। যদি তাও দাঁত না ওঠে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে বেশ কিছু কারণে বাচ্চাদের দাঁত ওঠে না বা উঠতে দেরি হয়। তবে ভালো হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া। চিকিৎসক যেভাবে পরামর্শ দেবে সাধারণত আমাদেরকে সেভাবেই কাজ করতে হবে।

বেশিরভাগ বাচ্চাদের ক্ষেত্রেই বংশগত কারণে দাঁত উঠতে দেরি হয়। যদি বংশগত কারণ হয়ে থাকে তাহলে চিন্তার কোন বিষয় নয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর নিজে থেকে দাঁত উঠতে শুরু করবে। আর যদি শরীরের কোন সমস্যা থাকে অথবা শরীরে পুষ্টিজনিত কোন সমস্যা থাকে তাহলে একটু দেরি হতে পারে। এক্ষেত্রেও চিন্তার কারণ নেই বাচ্চাকে বেশি বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় জ্বর

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় জ্বর হয়ে থাকে। যেহেতু দাঁত উঠে মাড়ি ফেড়ে সাধারণত তাই অনেক বাচ্চা এই ব্যথা সহ্য করতে পারে না যার ফল শ্রুতিতে অনেক বেশি কান্নাকাটি করে এবং ব্যথার কারণে তাদের শরীরে জ্বর চলে আসে। এক্ষেত্রে হালকা পরিমাণে জ্বর থাকতে পারে তবে বেশি জ্বর হলে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই শরীরে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বর থাকে তাহলে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শিশুদের দাঁত ওঠার সময় বমি

অনেক শিশুদের দেখা যায় যে দাঁত ওঠার সময় বমি করে থাকে। সব বাচ্চার ক্ষেত্রে যে এমনটা হবে এরকম কোন বিষয় নয়। কিছু কিছু বাচ্চা রয়েছে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা অনেক কম সাধারণত তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। আমরা জানি যে দাঁত বের হওয়ার সময় অনেক বেশি ব্যথা অনুভূত হয়।

যেহেতু বাচ্চাদের ধৈর্য শক্তি কম এবং তারা ব্যথা সহ্য করতে পারে না। তাই অনেক সময় তাদের শরীরে জ্বর চলে আসে অথবা অনেক বেশি কান্নাকাটি করে। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তারা দাঁত ওঠার সময় বমি করে দেয়। এই সমস্যাগুলো খুবই সাধারণ। বেশি চিন্তিত না হয়ে ধৈর্য ধরুন এমনিতেই কয়েকদিন পর ঠিক হয়ে যাবে। যদি না হয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।

আমাদের শেষ কথা

বাচ্চাদের দাঁত ওঠায় পিতা-মাতার করণীয় সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছি। একজন আদর্শ পিতা-মাতা হিসেবে আমাদের অবশ্যই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা রাখা উচিত। কারণ বাচ্চাদের যখন দাঁত উঠতে শুরু করে সাধারণত তখন বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। আমরা যেন এই সমস্যা গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারি তার জন্য এই বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা রাখা উচিত।

আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি বিস্তারিত ভাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন। যদি আপনার বাচ্চার খেতে এই লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে আপনাকে অনেক বেশি যত্নবান হওয়ার কথা হবে। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের তথ্য আরো জানতে হলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

আমি আশা করছি আপনারা আজকের পোস্টটি থেকে বাচ্চাদের দাত ওঠার সঠিক সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি শাহরিয়ার জামান (আবির) পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং জামান আইটি ২৪ এর CEO।

Leave a Comment