হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন
ভাতের মাড়ের জনপ্রিয়তা বর্তমান বিশ্বে চোখে পড়ার মতো হারে বেড়েই চলছে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে সিডনি। কিন্তু একটা সমস্যা হচ্ছে, ভাত রান্না করার পর সবাই মাড় ফেলে দিচ্ছেন। ফলে পুষ্টিগুণ চলে যাচ্ছে। নিচে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানানো হলো:
ভাতের মাড়ের উপকারিতা
ভাতের মাড়ের উপকারিতা সম্পর্কে একাধিক গবেষণায় জানা গেছে যে, শরীর এবং ত্বককে চাঙ্গা করতে ভাতের মাড়ের কোন বিকল্প নেই। এমনকি ভাতের মাড় অনেক রোগের জন্যও কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। একাধিক প্রাচীন গ্রন্থেও ভাতের মাড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। ভাতের মাড় বা ফ্যান কাজে লাগিয়ে শরীরের বিভিন্ন রোগ দুর করা যায়,যা গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। ভাতের মাড়ে বিভিন্ন কার্যকরী উপাদান রয়েছে, যেমন- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, খনিজ, ভিটামিন-ই সহ আরো বিভিন্ন ধরণের উপাদান। আপনার শরীর গঠনে ভাতের মাড় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে এবং সেই সঙ্গে আরও নানান কাজে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রিয় পাঠক, আপনারা যদি ভাতের মাড়ের উপকারিতাগুলো জানতে চান, তাহলে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়ুন। তাহলে সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন। নিচে ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন।
ভাতের মাড় নিয়ে কিছু কথা
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরি। আপনি কি ভাত রান্নার পর মাড় ফেলে দিচ্ছেন? তাহলে ভুল করছেন, কেননা চালের যা গুনাগুন সেগুলো মাড়ের সাথে চলে যাচ্ছে। এর ফলে ভাতের মাড়ে যে পুষ্টিগুণগুলো রয়েছে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে না। ভাত খেয়ে শুধু শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু অন্য কোন সুফল মিলছে না। ভাতের মাড়ে অনেক কার্যকরী উপাদান রয়েছে, এই পোস্টর মাধ্যমে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো।
ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা:
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ ভাতের মাড় চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আপনি যদি সপ্তাহে তিনদিন গোসলের আগে ভাতের মাড় চুলে ভালো করে লাগাতে পারেন এবং কিছু সময়ের জন্য অপেক্ষা করে হালকা গরম পানি দিয়ে চুলটা ধূয়ে নিতে পারেন, তাহলে আপনার চুলের গোড়ায় পুষ্টির সঠিক উপাদানগুলো পাবে এবং পুষ্টির অভাবগুলো দূর হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। চুলের বিভিন্ন রোগ বালাই দূর হয়ে যাবে এবং আপনার চুলের সৌন্দর্য বা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
ভাতের মাড় এনার্জির ঘাটতি দূর করেঃ ভাতের মাড় শরীরের এনার্জি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যদি শীরর চর্চার আগে নিয়মিতভাবে এক গ্লাস করে ভাতের মাড় পান করেন তাহলে আপনার শরীরে ৮ টি উপকারী অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। অ্যামাইনো এসিড বৃদ্ধির ফলে এক্সারসাইজের মাধ্যমে শরীরের পেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও ভাতের মাড়ে উপস্থিত রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। যা এনার্জির ঘাটতি দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন ভাত রান্না করার পর অযথা মাড় ফেলে দিবেন না। আপনি যদি নিয়মিতভাবে ভাতের মাড় খেতে পারেন, তাহলে আপনার এনার্জির ঘাটতি দ্রুতই দূর হয়ে যাবে। এছাড়া আরও বিভিন্ন রোগবালা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। তাই ভাতের মাড় খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
ভাতের মাড় ডায়রিয়া চিকিৎসায় কাজে লাগেঃ ডায়রিয়া হলে আপনি যদি ভাতের মাড় খেতে পারেন, তাহলে এটি আপনার ভালো কাজে দিবে। ডায়রিয়া হওয়াতে প্রতিনিয়ত আপনার পানির মত পায়খানা হতেই থাকে। এর সাথে যদি পেটে ব্যথা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভাতের মাড় খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন আপনি অনেকটা উপকৃত হচ্ছেন। আপনার পেট খারাপ হলে এক গ্লাস পরিমান ভাতের মাড়ের সাথে অল্প পরিমাণ লবণ মেশিয়ে পান করুন, দেখবেন শরীরে খনিজের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেকটা কমে যায়, তাই ডায়রিয়া হলে ভাতের মাড় পান করার কোনো বিকল্প নাই। আপনার যদি ডায়রিয়া হয়ে থাকে তবে ভাতের মাড় পান করতে পারেন। তাহলে অনেকটা উপকৃত হবেন। তবে এর পাশাপাশি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ব্রণের প্রকোপ কমিয়ে থাকেঃ আপনি যদি প্রতিদিন দুইবার করে ভাতের মাড় ভালো করে মুখে লাগান তাহলে আপনার মুখের ব্রণ কমতে শুরু করবে। কেননা ভাতের মাড়ে উপস্থিত রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা আপনার ত্বকের অন্দরে প্রদানের মাত্রা হ্রাস করবে। আর এর ফলে আপনার মুখের ব্রণ দ্রুতই কমে যাবে। আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে ভাতের মাড় যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।
ভাতের মাড় ত্বক সুন্দর করেঃ ত্বকের সৌন্দর্য বা উজ্জলতা বৃদ্ধিতে ভাতের মাড় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ভাতের মাড় একটি প্রাকৃতিক উপায়ও বলতে পারেন। বিভিন্ন গবেষক তাদের গবেষণায় লক্ষ্য করেছেন যে, প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ভাতের মাড় মুখে লাগিয়ে যদি ম্যাসেজ করা যায়, তাহলে ত্বকের ছিদ্রগুলো ছোটো হয়ে যায় এবং ত্বকের উপরের অংশে জমে থাকা মৃত কোষগুলোর আবরণ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে সামান্য পরিমাণ তুলার সাহায্যে ভাতের মাড় মুখে লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসেজ করে রাতে শুয়ে থাকেন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখটা ধুয়ে ফেলতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি আপনারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ভাতের মাড়ের বিকল্প নেই।
ভাতের মাড় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দুর করতে ভাতের মাড় খুবই উপকারী। কেননা ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী। ফাইবার দেহের মেটাবলিজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে আর এর ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। হজম শক্তি বৃদ্ধি পেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাগুলো খুব সহজেই দূর হয়ে যায়। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ হয়, তাহলে ভাতের মাড় খেতে পারেন আশা করি ভালো উপকার পাবেন।
ভাতের মাড় দেহের ক্লান্তি দুর করেঃ ভাতের মাড় সাধারণত তরল হয়। ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেড যা আপনার শরীরে শক্তির ঘাটতি দূর করতে এবং শরীরে প্রচুর পরিমাণে কার্বাইডের প্রবেশ করিয়ে দেহের ক্লান্তি ভাব দুর করতে সহায়তা করে। আপনি যদি পরিশ্রমের ফলে নিজেকে ক্লান্ত মনে করেন, তাহলে আপনি ভাতের মাড় খেতে পারেন।
ভাতের মাড় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভাতের মাড় খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের জন্য একটি সেরা খাবার হল ভাতের মাড়। কেননা ভাতের মাড়ে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় সেটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
মৌসুমী রোগ প্রতিরোধে ভাতের মাড়ঃ মৌসুমী রোগ প্রতিরোধে ভাতের মাড় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জলবায়ু বা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশের প্রায় অনেক মানুষের বিভিন্ন ধরণের রোগ দেখা যায়, যেমন সর্দি, জ্বর, কাশি ইত্যাদি। এসব রোগ প্রতিরোধ করতে চাইলে বেশি বেশি ভাতের মাড় খেতে হবে। যদি নিয়মিত ভাতের মাড় খেতে পারেন, তাহলে আপনার এসব রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
ভাতের মাড় পাকস্থলির জন্য খুব উপকারীঃ পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা দুর করে পাকস্থলি ঠিক রাখতে ভাতের মাড়ের গুরুত্ব অপরিসীম। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা রয়েছে এবং কোনকিছু ঠিকমত হজম হয় না, তাদের জন্য ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক বেশি। আপনার পাকস্থলী যদি ঠিক রাখতে চান তাহলে নিয়মিতভাবে ভাতের মাড় খেতে পারেন।
ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা ভাতের মাড়ের ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলাম। এখন আমরা জানবো ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম। ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম হলো-
- আপনি যখন ভাত রান্না করবেন তখন রান্না করার পর মাড়গুলো বের করে নিয়ে, গরম থাকা অবস্থায় মাড়ের ভিতরে অল্প পরিমাণ লবণ মিশিয়ে চুমুক দিয়ে আপনি সেটি পান করতে পারেন।
- আবার আপনার বাসায় যদি ঘি থাকে তাহলে ভাতের মাড়ের সাথে ঘি মিশিয়েও পান করতে পারেন। তাহলে আরো বেশি উপকার পাবেন। এই নিয়মগুলো মেনে যদি আপনি ভাতের মাড় খান তাহলে আপনার শরীরে বিভিন্ন রকম উপকারিতা পাবেন।
গর্ভাবস্থায় ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় ভাতের মাড় খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে। ভাতের মাড়ে রয়েছে কার্বোহাইডেট এবং ফাইবার যা গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধির জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া কার্বোহাইড্রেড থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধিতে এটি সাহায্য করে। এছাড়াও ভাতের মাড়ে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল যা শিশুর জন্য খুবই উপকারী।
গর্ভাবস্থায় বদহজম জনিত সমস্যা থাকলে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যায়। এটি শিশুর হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভাতের মাড়ে রয়েছে খনিজ পদার্থ, যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার ইত্যাদি যা শিশুর দাঁত ও হাড় শক্তিশালী করতে সহায্য করে।
রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে দিলে কি হয়
রূপচর্চার জন্য আপনি ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। রূপচর্চার জন্য ভাতের মাড় খুবই উপকারী। যদি আপনার মুখের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, মুখে ব্রণ উঠে, মুখ রুক্ষ হয়ে যায়, মুখের চামড়া ঢিলা হয়ে যায় তাহলে এসব সমস্যার জন্য আপনি রূপচর্চার জন্য ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা করতে চান,
তাহলে রান্নাকরার সময় ভাতের মাড় বের করে নিবেন এবং সেগুলো ছাকনি দিয়ে ছেকে নিবেন। তারপর আপনার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রাখার পর সেগুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। আর আপনি যদি এভাবে নিয়মিত কয়েকদিন আপনার মুখে লাগান, তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে আশা করি। আপনার ত্বকের আদ্রতা যদি হারিয়ে যায়, তাহলে এ্যালোভেরা জেল এর সাথে ভাতের মাড় মিশিয়ে আপনার ত্বকের মধ্যেও লাগাতে পারেন। তাহলে আপনার ত্বকের আদ্রতা অবশ্যই ফিরে আসবে। আপনার চোখের নিচে যদি কালো দাগ পড়ে যায়, তবে আপনি ভাতের মাড় একটু গাঢ় করে নিয়ে চোখের কালো দাগে লাগাবেন, তাহলে আপনার চোখের নিচের কালো দাগগুলো দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনি যদি দুধের সাথে ভাতের মাড় মিশিয়ে ত্বকে লাগান তাহলেও ভালো উপকার পেতে পারেন।
ভাতের মাড় মুখে দিলে কি হয়িএ সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
ভাতের মাড় খেলে কি মানুষ মোটা হয়
আপনাদের অনেকের প্রশ্ন থাকে যে, ভাতের মাড় খেলে কি মানুষ মোটা হয়? এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। কেননা ভাতের মাড়ে রয়েছে উচ্চ মাত্রার পুষ্টি উপাদান। পাঠক জেনে নেওয়া যাক, ভাতের মাড় খেলে মানুষ মোটা হয় কিনা সে সম্পর্কে। প্রতিটা মানুষের শরীর-স্বাস্থ্য ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আপনার শরীর যদি অনেক রোগা, চিকনা, পাতলা এবং দুর্বল স্বভাবের হয়। তাহলে আপনার জন্য ভাতের মাড় খাওয়া খুবই উপকারী। ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রড, যা আপনার শরীরে পুষ্টি উপাদানগুলো সরবরাহ করে থাকে এবং এর ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আপনার শরীরের দুর্বলতাগুলোও কেটে যাবে পুষ্টি উপাদানের জন্য। আপনি যদি নিয়মিতভাবে ভাতের মাড় খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। অধিক পরিমাণে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং পানি জমা হতে থাকবে। আপনার শরীরে যদি অধিক পরিমাণ পানি জমা হতে থাকে, তাহলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হতে থাকবে তাই ভাতের মাড় খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।
যেভাবে ভাতের মাড় তৈরি করতে হয়
ভাতের মাড় প্রস্তুত করতে চাইলে ভাত রান্নার সময় আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। আপনি যদি ইচ্ছা করেন তবে আপনি চাইলে বাড়িতে বসেই ভাতের মাড় প্রস্তুত করতে পারবেন। কিভাবে মাড় তৈরি করবেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাউল নিন।
- চাউলগুলো ভালো করে পরিষ্কার করে ফেলুন।
- একটি পাত্রে চাউল থেকে চার গুণ পরিমাণ বেশি পানি নিয়ে নিন।
- পাত্রটি চুলার উপরে তুলে দিন।
- যতক্ষণ চাউল সিদ্ধ না হয় ততক্ষণ চুলায় জ্বাল দিন।
- চাউল যদি সিদ্ধ হয়ে যায় তখন এটি ভাতে পরিণত হবে।
- এরপর ভাতের মাড় সংগ্রহ করে ভালোভাবে ছেকে নিন।
ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ
ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন রকমের পুষ্টিগুণ থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভাতের মাড়ের ভিতরে উল্লেখযোগ্য হারে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়াও ভাতের মাড় বা ফ্যানে যে উপাদানগুলো রয়েছে নিচে উল্লেখ করা হলো:
- আমিষ
- শর্করা
- লৌহ
- ফসফরাস
- ক্যালসিয়াম
- ম্যাঙ্গানিজ
- জিংক
- কপার
- মিলেনিয়াম
আমরা ভাতের ফ্যান বা মাড় নিয়ে চিনতে ভাবনা না করলেও বিভিন্ন দেশ এটি নিয়ে নানান গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। চীনা বিজ্ঞানী মি.লিন ভাতের মাড় ফেলে দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা করে দেখেছেন যে, ভাতের মাড়ে লৌহ, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, মিলেনিয়াম, কপার এই ৬টি উপাদান রয়েছে। মাড়গুলো ফেলে দেওয়ার ফলে উপরের এই উপদানগুলো চলে যায়।
মাড় বা ফ্যান ফেলে দেওয়াতে যে পুষ্টি উপাদান অপচয় হয়
পুষ্টি |
উপাদান |
লৌহ | ১০ গুণ |
ক্যালসিয়াম | ৪ গুণ |
মাঙ্গানিজ | ১২ গুণ |
কপার | ৬ গুণ |
মেলেনিয়াম | ২ গুণ |
ভাতের মাড়ের অপকারিতা-ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক
আমরা উপরের অংশের আলোচনায় ভাতের মাড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। প্রায় সব জিনিসের উপকারিতার সাথে তার কিছু অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়। তেমনি ভাতের মাড়ের উপকারিতার সাথে কিছু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ভাতের মাড় আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যর জন্য যে ক্ষতি করে, সে সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। অধিক পরিমাণে মাড় খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, অতিরিক্ত পরিমাণ মাড় খাওয়ার ফলে কি ক্ষতি হয় সেগুলো সম্পর্কে।
- আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণ মাড় খান, তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে এবং অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারেন।
- ভাতের মাড় যেহেতু তরল জাতীয় খাবার। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খান তাহলে ডায়রিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে।
- ভাতের মাড়ে ফ্যাট রয়েছে, তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের মাড় খান, তাহলে আপনার শরীরে, রক্তে, লিভারে চর্বি জমার সম্ভাবনা রয়েছে।
- আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের মাড় খান, তাহলে আপনার কোলেস্টোলের মাত্রা বাড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতার মাড় খেলে, রাতে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।
- অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের মাড় খেলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
লেখকের শেষ কথা
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।
আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।