ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

আপনারা কি ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন? তাহলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারন এ পোস্টটির মধ্যে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে। আশাকরি পোস্টটি পড়লে ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন

ভূমিকা:

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি পেশা যাকে অনলাইনে আয় করা হিসেবেও অনেকে চেনে। আর যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। বর্তমান সময়ে ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি আমাদের সবার কাছেই সুপরিচিত।

ফ্রিল্যান্সিং কি

বিশ্ব বাজার আস্তে আস্তে অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। দেশে বা বিদেশে আজকাল প্রশাসনিক বা বাণিজ্যিক সকল কাজ গুলো অনলাইন ভিত্তিক হতে শুরু করেছে। এতে করে যেমন কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি সময়ও অনেোংশেই বাঁচানো যাচ্ছে। অনলাইনে যে সকল কাজ পাওয়া যায়, সে কাজগুলোকেই মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ বলা হয়।

ফ্রিল্যান্সিং কি

ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি কাজের ধরন যেখানে ব্যক্তি বা পেশাজীবী নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা নিয়োগকর্তার সঙ্গে পূর্ণকালীন চুক্তিতে কাজ না করে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প বা কাজ সম্পন্ন করেন। ফ্রিল্যান্সাররা স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। যেমন: গ্রাফিক ডিজাইন, লেখালেখি, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডেটা এন্ট্রি এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং শব্দটিকে আরও সহজ ভাবে বলতে গেলে অনলাইন ইনকাম টার্ম ব্যবহার করা হয়। কেননা সাধারণত অনলাইনে যেসকল কাজ পাওয়া যায় বা যে কাজ গুলো করে টাকা আয় করা যায় তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের না হয়ে চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা কে ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইনে ইনকাম করা বলে।

ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সময় এবং কাজের ধরন নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারে। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সাররা কোন সময় কাজ করবে তা সম্পূর্ণ নিজেরাই নির্ধারণ করে বা সময়ের উপর বেশি নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকে। মূলত যারা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কাজ করে থাকেন তারা স্বাধীন ভাবে তাদের কাজের সময়সূচি তৈরি করতে পারেন, যা অনেকের জন্য একটি বড় সুবিধা।

ফ্রিল্যান্সিং কি

ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন: Upwork, Fiverr, Freelancer, Toptal, Kwork-এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা কাজের সুযোগ পায় এবং বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে পারেন। এতে করে ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিমাণও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়। এই পেশায় কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক সাধারণত নির্দিষ্ট প্রজেক্টের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় এবং ক্লায়েন্টের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করা হয়।

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যেখানে আপনি নিজের পছন্দমতো কাজ করে, নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করে এবং সারা বিশ্বের ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন। আপনার যদি কোনো বিশেষ দক্ষতা থাকে, তাহলে সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ঘরে বসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো খুবই বৈচিত্র্যময় এবং বিভিন্ন পেশাগত দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। ফ্রিল্যান্সাররা তাদের নিজস্ব দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের কাজ গ্রহণ করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সাধারণত নিচের কাজ গুলো বেশি জনপ্রিয়।

ডিজিটাল মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে ফিল্যান্সিং এর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং-এ। ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে অনলাইনে পণ্য, সেবা প্রচার করা বা বিক্রি করা। অর্থাৎ অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম যেমন: সার্চ ইঞ্জিন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টের পণ্য, সেবা বা ব্যান্ড প্রচার করা।

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন কাজের চাহিদা আছে। কারণ এটি কম খরচে অনেক গ্রাহকের কাছে প্রচার বা মার্কেটিং করা যায়। এখনকার সময় কম্পিটিশনের তাই যে কোনো ব্যবসা অথবা কোম্পানি অন্যদের থেকে ভালো করতে চাইলে একজন ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করা অনেক প্রয়োজন। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ কিছু সাব ক্যাটাগরি রয়েছে কাজ করার জন্য। যেমন:

  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO: SEO এর পূনরূপ হচ্ছে, search Engine optimization। অর্থ্যাৎ সহজ কথায় আমরা যখন গুগল কিংবা অন্য যেকোন সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু লিখে সার্চ দিই, তখন গুগল কিংবা ঐ সার্চ ইঞ্জিন কত গুলো রেজাল্ট দেখায়। সেখান থেকে আমরা আমাদের পছন্দমত লিংকে ক্লিক করে আমার কাঙ্ক্ষিত ওয়েব সাইটে ভিজিট করে আমাদের দরকারি তথ্য খুঁজে পাই। আর যে কারণে গুগল কিংবা কোনো সার্চ ইঞ্জিন ওই রেজাল্টগুলো দেখায়, সেই কারণ কিংবা পদ্ধতিকে বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো এমন একটি মার্কেটিং কৌশল যেখানে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য, সেবা, বা ব্র্যান্ডের প্রচার করা হয়। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই এখন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদি প্লাটফর্মে অ্যাকটিভ থাকে।তাই এখানে যে কোন ব্যান্ড বা পণ্য প্রচার করার সাথে সাথে গ্রাহকরা সে বিষয়ে জানতে পারে।

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর খুব বেশি চাহিদা হওয়ার কারণে খুবই কম খরচে অনেক মানুষের কাছে যে কোন ধরনের পণ্য প্রচার করা যায়। এই মার্কেটিং কৌশলের মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের লক্ষ্যবস্তু গ্রাহকদের কাছে পৌঁছায় ও গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে এবং বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সাধারণত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিংকডইন, ইউটিউব, পিন্টারেস্ট প্রভৃতি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর উদ্দেশ্য হলো ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি করা, ট্রাফিক জেনারেট করা, গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা এবং পণ্য বা সেবার বিক্রয় বৃদ্ধি করা।

অ্যাফিলিয়েট মার্কোটিং: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো একটি অনলাইন মার্কেটিং মডেল যেখানে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান (অ্যাফিলিয়েট) অন্য কোনো ব্যবসার পণ্য বা সেবা প্রচার করে এবং সেই প্রচার থেকে বিক্রি হলে একটি কমিশন উপার্জন করে। মূলত, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য আরও গ্রাহক বা ক্রেতা আকর্ষণ করতে পারে, এবং অ্যাফিলিয়েটরা তাদের প্রচেষ্টার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ সমূহ-

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার একটি নির্দিষ্ট পণ্যের লিংক প্রচার করে, যা বিশেষ ভাবে ট্র্যাক করা হয়।
  • গ্রাহক সেই লিংকের মাধ্যমে পণ্যটি কিনলে বা নির্দিষ্ট কোনো অ্যাকশন (যেমন, সাইন আপ করা) করলে অ্যাফিলিয়েট কমিশন পান।
  • কমিশনের পরিমাণ সাধারণত বিক্রয়ের একটি শতাংশ বা নির্দিষ্ট ফি হিসেবে নির্ধারিত থাকে।

এই পদ্ধতি সাধারণত ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, বা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি জনপ্রিয় উপায় হয়ে উঠেছে অনলাইন আয়ের জন্য। কারণ এতে কোনো পণ্য তৈরি বা সেবা প্রদান করতে হয় না শুধু প্রচার এবং ট্রাফিক জেনারেট করা হয়।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

আমরা প্রতিনিয়তই সোশ্যাল মিডিয়াতে এই গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে অনেক রকম কথাবার্তা শুনে থাকি। ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি এই তালিকাতে অবশ্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন থাকবে। একটি প্রোডাক্টের মার্কেটিং এর জন্য অবশ্যই একটি সুন্দর ছবির ডিজাইন প্রয়োজন হবে।মূলত গ্রাফিক্স ডিজাইন করেই ছবিকে সুন্দর করে তোলা হয়।

এ ছাড়াও সুন্দর ব্যানারের প্রয়োজন হবে। তাই যে কোনো কোম্পানির মালিক বা মালিক পক্ষ যদি তার প্রোডাক্টের বিক্রির পরিমাণ বেশি করতে চায় তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রোডাক্টের মার্কেটিং এডভার্টাইজিং,ক্যাটালগ, বিজনেস কার্ড, ইউটিউব থাম্বনেইল এবং প্রোডাক্ট প্যাকেট ডিজাইন এর কাজ গুলো একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার করে থাকে ।

বর্তমান সময়ে আপনি যে সেক্টরেই যাবেন সেই সেক্টরেই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ দেখতে পারবেন। ভিজিটিং কার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্যাটালগ ও প্রোডাক্ট প্যাকেজিং এই সবকিছুই গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে করা হয়েছে। অফলাইন এবং অনলাইন দুই সেক্টরেই গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজের চাহিদা অনেক।

গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রায় সমস্ত কোম্পানিরই দরকার হয়। কোনো কোম্পানি যদি কোম্পানির প্রচার করতে চায় তাহলে কোম্পানিকে পোস্টার বা ব্যানার ডিজাইন করতে হয়। বর্তমানে আপনি ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউব কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে যে অ্যাডভার্টাইজ গুলো আপনারা দেখতে পান সেসব কিছুই গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর দ্বারা তৈরি করা হয়।

উপরের কারণগুলোর জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসসহ অফলাইন চাকরিগুলোতে অনেক বেশি। আপনি যদি মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা এনালাইসিস করে দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন এই ক্যাটাগরিতে প্রত্যেক ঘণ্টায় হাজার হাজার কাজ পাবলিশ করা হচ্ছে।

তাছাড়া এই কাজের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক Graphic Designer আছে যারা প্রত্যেক ঘন্টায় ১৫০ ডলার থেকে ১১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করছেন। আর চাকরিতে দক্ষতা অনুযায়ী একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মান্থলি স্যালারি ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ডেটা এন্ট্রি

ডেটা এন্ট্রি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট সফটওয়্যার বা ডাটাবেইজে তা সঠিক ভাবে ইনপুট করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ কারণ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা, ও বিশ্লেষণ কাজে সঠিক ডেটা অপরিহার্য। ডেটা এন্ট্রির কাজ গুলো সাধারণত ম্যানুয়ালী করা হয়। যেমন স্প্রেডশিট বা বিশেষ ডেটাবেইজ সফটওয়্যারে তথ্য টাইপ করা।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে মূলত কর্মীদের মনোযোগী হতে হয়। কারণ ডেটার সামান্য পরিমাণ ভুল বিশ্লেষণ বা তথ্য সংরক্ষণের ভুল ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে। ডেটা এন্ট্রি পেশায় টাইপিং গতি, সঠিকতা, এবং ডেটা যাচাইয়ের দক্ষতা প্রয়োজন।

বিভিন্ন ধরনের ডেটা এন্ট্রি কাজ রয়েছে, যেমন নাম, ঠিকানা, পণ্যের বিবরণ, হিসাব তথ্য, অথবা জরিপের ফলাফল সংগ্রহ করে তা ডাটাবেসে এন্ট্রি করা। ডেটা এন্ট্রি কাজ অনেক ক্ষেত্রেই অনলাইন বা রিমোট কাজ হিসেবে করা যায়। যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটি একটি ভালো পেশা।

কনটেন্ট রাইটিং

কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ হল ক্লাইন্ট আপনাকে লেখার বিষয়, সাবজেক্ট, কি ওয়ার্ড এবং লেখার ফরমেট বলে দিবে এবং আপনাকে সেই বিষয়ে ভালো করে গবেষণা করে এবং বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লিখে দিতে হবে। মূলত কনটেন্ট রাইটিং করা হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কনটেন্ট পাবলিশ করার জন্য যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে প্রচুর টাকা আয় করা যায়।

কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা বর্তমান সময়ে অনেক বেশি হওয়ায় কনটেন্ট রাইটিং করে প্রচুর টাকা আয় করা যায়। এবং প্রত্যেকটা কাজের জন্য কনটেন্ট রাইটিং এর বেশ প্রয়োজন রয়েছে। একটি ভালো কনটেন্ট একটি ব্যান্ড ভ্যালু তৈরি করতে পারে এবং গ্রাহকদের খুব সহজেই আকর্ষণ করতে পারে।নসাধারণত বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যক্তিগত ভাবে প্রচার বাড়ানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার দের দ্বারা কন্টেন রাইটিং করে থাকে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা মানুষের ভাষা বুঝতে এবং তা ব্যবহার করে কাজ করতে পারে। এটি মূলত একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) যা আমাদের দৈনন্দিন কাজ গুলোকে সহজ করে তুলতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য যাদের অধিক আগ্রহ রয়েছে কিন্তু কোন ধরনের অভিজ্ঞতা নেই তাদের জন্য ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স উপযোগী কাজ।কারণ এই কাজের জন্য আপনার হাতে থাকতে হবে প্রচুর খালি সময়। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স হিসাবে প্রধান কাজ হলো ব্যবসা, উদ্যোক্তা এবং ব্যক্তিদের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করা।

অনেক বড় বা ছোট ব্যবসা গুলোর মালিকেরা ব্যস্ত থাকেন আর এই কারণে তারা খুঁজে নেন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্সদের।এক্ষেত্রে ভার্চুয়াল  অ্যাসিস্ট্যান্ট  হিসেবে আপনাকে আপনার ক্লায়েন্ট এর হয়ে কিছু সাধারণ কাজ গুলো করতে হবে। যেমন, ব্যবসা গুলোর রিপ্লাই দেওয়া, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ম্যানেজ/দেখাশুনা করা, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত করা , চ্যাট, বা ফোনের মাধ্যমে গ্রাহকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়া ইত্যাদি।

ভিডিও এডিটিং

ভিডিও এডিটিং বলতে মূলত স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের দিয়ে বিভিন্ন সফটওয়্যার মাধ্যমে বিভিন্ন শট, ক্লিপ এবং অডিও উপাদান গুলো একত্রিত করে একটি সুশৃঙ্খল ভিডিও তৈরি করা বা স্পেশাল ইফেক্ট এবং গ্রাফিক্স ইত্যাদি যোগ করে ভিডিওকে আকর্ষণীয় করাকে বোঝানো হয়।বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা অনেক বেশি কারণ ফেসবুক,ইউটিউব ,ইন্সটাগ্রাম টিকটক সহ বিভিন্ন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মেতে মার্কেটিং করার জন্য ভিডিও এডিটর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বর্তমান সময়ে মার্কেটপ্লেসে শর্ট ভিডিও এডিটিং কাজ অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই কাজের চাহিদা আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেই বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে। এতে করে ভিডিও এডিটিং এর কাজের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তাই বলা যায় ভিডিও এডিটিং করে প্রতি মাসে ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।

ওয়েব ডিজাইন

ওয়েব ডিজাইন হলো কোন একটি ওয়েব সাইট দেখতে কেমন হবে এবং সেখানে কি কি ফিচার থাকবে তার একটি ডিজাইন তৈরি করা। একজন ওয়েব ডিজাইনার ওয়েব সাইটের আউটলুক, ফন্ট, কালার, ইমেজ, মেনু, টাইটেল বার ইত্যাদি কেমন হবে তা নির্ধারণ করে। ওয়েব ডিজাইন কাজের চাহিদা খুব বেশি। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন শিখে দক্ষ হন তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ কাজ করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

বর্তমানে ক্লায়েন্টের ব্যবসার সাথে মিল রেখে বিভিন্ন ধরনের ওয়েব সাইট তৈরি করতে হয়। এবং একজন ওয়েব ডিজাইনার ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন।ওয়েব ডিজাইনার এর চাহিদা গুলো সব সময় ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেটপ্লেস গুলোতে লক্ষ্য করা যায়। কারণ ওয়েব ডেভলপাররা একটি ওয়েব সাইট তৈরি করে দেওয়ার পর সেটি ডিজাইন করার জন্য একজন ভালো মনের ওয়েব ডিজাইনার কে হায়ার করতে হয়। তাই একজন ফ্রিল্যান্সার এর জন্য ওয়েব ডিজাইন এর অভিজ্ঞতা অর্জন করা খুবই প্রয়োজন।

ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান লাভ করার পর একজন ফ্রিল্যান্সার মার্কেটপ্লেসে নিয়মিত কাজের অর্ডার পেতে থাকে। কোম্পানি গুলো সব সময় একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার কে খুঁজতে থাকে। কারণ প্রত্যেকটি কোম্পানি তার ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য বদ্ধপরিকর সুতরাং ওয়েব ডিজাইন অনলাইনে কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হিসেবে উল্লেখিত রয়েছে সেটি বলার আর কোন অবকাশ রাখেনা। ওয়েব ডিজাইন করে মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

বর্তমান মার্কেটপ্লেসগুলোতে যদি আরেকটি কাজের চাহিদা সম্পর্কে বলা হয় তাহলে অবশ্যই ওয়েব ডেভেলপার এর বিষয়টি পরিলক্ষিত হবে। বর্তমানে প্রতি মিনিটে ১৭৫ টারও বেশি ওয়েব সাইট অর্থাৎ প্রতিদিন বিশ্বে প্রায় ২ লক্ষ ৫২ হাজার ওয়েব সাইট তৈরি হচ্ছে এবং প্রতিবছর এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই থাকছে।

সুতরাং অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এই বিষয়টিতে ওয়েব ডেভলপার অন্তর্ভুক্ত থাকবে এ নিয়ে কোন আর সন্দেহ নেই। একটি কোম্পানি সব সময় চায় তার একটি নিজস্ব ওয়েব সাইট থাকুক এবং সেই ওয়েবসাইটে তার কোম্পানির প্রোডাক্টের প্রচার এবং সেলের জন্য নির্দিষ্ট বিষয় গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকুক। আর সে জন্য কোম্পানির মালিক পক্ষকে অবশ্যই একজন ওয়েব ডেভলপারকে হায়ার করতে হয়।

উক্ত ফ্রিল্যান্সার বা ওয়েব ডেভলপার কোম্পানির জন্য একটি সুন্দর ওয়েব সাইট তৈরি করে দেন। তাই একজন ফ্রিল্যান্সারের যদি JAVA, PHP, XML, HTML এ গুলো সম্পর্কে ভালো ভাবে অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে মার্কেটপ্লেস থেকে সে অনেক অর্ডার পাবে।

গেইম ডেভেলপমেন্ট

বর্তমান বিশ্ব জুড়ে কম্পিউটার ব্যবহারকারী এবং মোবাইল ব্যবহারকারী সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে ঝাড়ছে ভিডিও গেমের চাহিদা। কম্পিউটারে বা মোবাইলে গেইম খেলে না এমন মানুষ পাওয়া এখন বেশ দুষ্কর। ছোট থেকে বড় সকল বয়সের মানুষ এখন গেইম খেলে। কেউ হয়ত সেটা অনেক বেশি খেলে আবার কেউ হয় কাজের ফাকে ফাকে খেলে গেইমের প্রতি দুর্বলতা কম বেশি সবার ই আছে। এমন বিপুল চাহিদার কারণে গেম ডেভেলপমেন্টের চাহিদাও বাড়ছে ব্যাপকভাবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০২৬ সালে বৈশ্বিক গেমিং বাজারের প্রবৃদ্ধি হার বর্তমান বছর অনুযায়ী ১৩ শতাংশ বেড়ে ২১ হাজার ২৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরা হচ্ছে। ২০২০ সালে গেমারদের সংখ্যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩০৮ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও মোবাইল গেমসের বাজার বড় হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারের এ মোবাইল গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন একটিভ প্লেয়ার আছে যারা নিয়মিত নানা ধরনের মোবাইল গেমস খেলছে।

সুতরং বুঝতে পারছেন গেইমের চাহিদা কত বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে যা বেড়ে চলবে। আপনি যদি এই গেইম ডেভেলপমেন্টকে ক্যারিয়ার হিসবে নিতে চান তাহলে এখনই সঠিক সময়।কেননা বর্তমান সময়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে গেইম ডেভেলপমেন্টের  ভবিষ্যতে এই কাজের চাহিদা আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই গেইম ডেভেলপমেন্টকে ক্যারিয়ার হিসবে বেছে নিতে পারেন।

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট

অ্যান্ডয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের বর্তমান সময়ে স্বর্ণের যুগ।আপনি যদি প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে শিখতে পারেন অ্যান্ডয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের কাজ। অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শিখলে নিজের বানানো অ্যাপ থেকে Google Admob এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

আবার অ্যাপ সেল করেও ইনকাম করতে পারবেন।কারন বর্তমানে এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার কারির সংখ্যা বর্তমানে কমই আছে বরং দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । ফলে বাংলাদেশ সহ ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে অ্যাপ ডেভলপার এর চাহিদা অনেক বেশি। তাই একজন প্রফেশনাল অ্যাপ ডেভলপার হতে পারলে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে আপনার জব এর সুযোগ রয়েছে।

বর্তমানে সবার হাতে স্মার্ট ফোন রয়েছে। সরাই কম বেশি অ্যাপ ব্যবহার করে মোবাইল সব কাজ করে থাকে। তাই ছোট বড় সকল কোম্পানি তাদের সার্ভিসকে কাস্টমারের কাছে সহজে পৌঁছে দিতে অ্যাপ তৈরি করছে। আপনি যদি ব্যাংক কথা চিন্তা করেন তাখলে দেখবেন, এখন প্রায় সকল ব্যাংক এর মোবাইল আপে রয়েছে এবং আপ থেকে সব কিছু করা যায়।

তাই বলা যায়, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর চাহিদা দিন দিন আরও বাড়বে। আপনি যদি একবার প্রোফেশনাল ভাবে অ্যান্ডয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের সকল কাজ শিখতে বা করতে পারেন তাহলে আপনাকে আর পিছু ফিরে দেখতে হবে না।আপনি এখান থেকে প্রতি মাসে ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।

লেখকের শেষ কথা

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।

আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

আমি নিজে যে প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখেছিলাম। RAM IT

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি শাহরিয়ার জামান (আবির) পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং জামান আইটি ২৪ এর CEO।

Leave a Comment