হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় এবং শীতে পা ফাটা রোধে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় এবং শীতে পা ফাটা রোধে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক। আমাদের ওবেসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন
ভূমিকা
শীতকালে আমাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে, বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি। এছাড়া গরমের সময়েও পা ফাটতে পারে। পা ফাটার প্রধান কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। যাদের শরীরে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-বি এর অভাব রয়েছে তাদের গরমের সময়ের পা ফাটে। আর এজন্য আমাদের উচিত ত্বকের সাথে সাথে পায়েরও যত্ন নেওয়া। পা ফাটা থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে গোসলের সময় অবশ্যই পা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও আপনি কিছু নিয়ম মানার মাধ্যমে পা ফাটা দূর করতে পারেন।
নারিকেল তেল আমাদের ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করে। সেজন্য শীতের সময় দিনে দুইবার করে নারিকেল তেল পায়ের ত্বকে মাসাজ করতে হবে। তাহলে পা ফাটা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। গরমের সময় যাদের শরীরে তরলের পরিমাণ কম থাকে, তাদের ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের চামড়া ফাটতে শুরু করে। আর পায়ের যত্নে আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে হলে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড থাকা জরুরি।
শীতে পা ফাটা রোধে করণীয়
শীতকালে ময়েশ্চারাইজার এর অভাবে পায়ের ত্বক অনেক শুষ্ক হয়ে পড়ে, ফলে পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। আমরা যখন সুন্দর সাজ, নতুন হেয়ার স্টাইল, নামিদামি কাপড় পরে বাইরে বের হই, আর তখন যদি পায়েল ফাটা গোড়ালি দেখা যায় তাহলে সব সাজ মাটি হয়ে যায় এবং লজ্জায় পড়তে হয়। আর সেজন্যই আমাদের পায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। শীতের সময় পা ফাটা রোধে আমাদের অবশ্যই গোসলের সময় পায়ের যত্ন নিতে হবে।
গোসলের সময় খোসা ও সাবান দিয়ে ভালোভাবে পা পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া পিউমিস থাকলে আরও ভালো হয়। আর চেষ্টা করবেন সবসময় পায়ের গোড়ালি নরম রাখার। এজন্য তৈলাক্ত জেল ক্রিম লাগিয়ে রাখতে পারেন। এছাড়া নারিকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন। নারিকেল তেল পায়ের যত্নে অনেক বেশি কাজ করে। পায়ের পাতা ও গোড়ালিতে নারিকেল তেল মেসেজ করতে পারেন। শীতের সময় ত্বক নরম রাখতে আমন্ড অয়েল বা তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
শীতের সময় আপনি বাহির হতে বাসায় আসার পর গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালোভাবে পা পরিষ্কার করে নিবেন। এরপর শুকনো কাপড় দিয়ে পা মুছে ফেলতে হবে। তারপর সেখানে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। পাশাপাশি আপনি চাইলে ফ্রুট ম্যাক্সও ব্যবহার করতে পারেন। আপনি মনে করলে আপনার বাসাতে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েও পায়ের যত্ন নিতে পারেন, যেমন- হলুদ, দই, দুধের সর, বেসন এগুলো পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধ করতে সহায়তা করে। আর এভাবেই আপনি শীতে পা ফাটা রোধ করতে পারবেন।
পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায়
শীতকাল আসলেই অনেকেই পা ফাটা সমস্যায় ভোগেন। আর গোড়ালি নিয়ে চিন্তায় থাকেন অনেকে। পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় খোঁজেন, কিন্তু পায়ের গোড়ালি ফাটা সারানো সম্পর্কে কিছুই জানেন না। আপনি জানলে মাত্র দুই দিনেই এই সমস্যা দূর করতে পারবেন। আসুন তাহলে জানে নেই, পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে। শীতকাল পড়লেই বাতাসে আদ্রতা অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। আর প্রাকৃতিক নিয়মেই এই আর্দ্রতার ঘাটতি সৃষ্টি হয়।
আর এর প্রভাব শুধু আমাদের স্বাস্থ্যের উপর নয়, বরং ত্বকেও এর প্রভাব পড়ে। আর এজন্য ত্বক তার প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে এবং রুক্ষ হয়ে ওঠে ত্বক। আর এর সাথে সাথে ত্বকে জ্বালা, চুলকানির মতো বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়। আর এর প্রভাব হাতে পায়ে দেখা যায়। এজন্য আমাদের মুখের পাশাপাশি হাত ও পায়ের বেশি যত্ন নিতে হবে। শীত পড়লে অনেকেরই পা ফেটে যায়। ফাটা গোড়ালি নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। কিন্তু কেন এমন হয় সেটা অনেকেই জানে না।
শীতের পা ফাটে কেন
শীতকালে ত্বকে একপ্রকার গ্রন্থি তেল নিঃসরণ হয়ে যায়। পায়ের গোড়ালিতে থাকে এই গ্রন্থি। আর এই রকম হওয়ার ফলেই পা ফাটতে শুরু করে। অতিরিক্ত দূষণের প্রভাবে পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, এগজিমার মত রোগের কারণেও পা ফাটতে পারে। আর এজন্যই আমাদের পায়ের আদ্রতা ধরে রাখতে হবে। সেজন্য সকলে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনে নারিকেল তেল। এছাড়াও ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে প্রাকৃতিক কোষ ফিরিয়ে দিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এমনকি এটি আপনার ত্বকের ভিতরে গিয়ে পুষ্টির যোগান দেয়।
গরমে পা ফাটা দূর করার উপায়
পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া একটি বড় সমস্যা। এটি গরমের সময় হয়, আবার শীতের সময়ও হয়। কম-বেশি সবাই কোন না কোন বয়সে এই সমস্যায় পড়ে। বিশেষ করে গরমের দিনেও কারো পা ফাটছে, এজন্য আবহাওয়া পরিবর্তনসহ আরো বিভিন্ন কারণ দায়ী। আমাদের পায়ের গোড়ালির ত্বকের শুষ্কতা অনেক বেশি। আর এর বেশিরভাগ কোষ মৃত, সেজন্য ত্বকের আর্দ্রতার অভাবে জীবাণুর আক্রমণের কারণে গরমেও পা ফাটে। এই পায়ের গোড়ালি ফাটা হতে পারে অন্য কোন রোগের লক্ষণ।
অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, ভিটামিন-ই, আয়রন ও ক্যালসিয়াম এর অভাবেও গোড়ালি ফাটতে পারে। গরমের সময় পা ফাটার আরেকটি কারণ হতে পারে পানির ঘাটতি। পরিবেশের আদ্রতা কম থাকার কারণে পানি কম পান করা, দীর্ঘসময়ে হাটাহাটি করার ফলে পায়ের ত্বকের আদ্রতা অনেক বেশি কমে যায়, ফলে চামড়া শুকিয়ে ফেটে যেতে পারে। আর এ থেকেই শুরু হয় পায়ের গোড়ালি ফাটা।
পা ফাটার অন্যতম কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। বিশেষ করে যাদের ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি এর অভাব রয়েছে তাদের গরমের সময়ও পা ফাটে। গরমের সময় মশ্চারাইজার মাখা যাবে না, কিন্তু পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। এতে পায়ের গোড়ালি ফাটা কমে যাবে। দিনে অন্তত দুইবার করে আপনার পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখতে পারেন। পায়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই জুতা ব্যবহার করতে হবে। এতে পায়ের ত্বক ভালো থাকবে।
পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়
পায়ের পাতা আমাদের শরীরের ভার বহন করে। আর শীতের সময় পা ফাটার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। শীতের সময় বাতাসের আদ্রতা কম হওয়ায় ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। আর এই পা ফাটার জন্য আপনি ঘরোয়া কিছু উপাদানের সাহায্য নিতে পারেন। আর ঘরোয়া উপাদানের কথা মনে আসলেই আমাদের মনে পড়ে কলার কথা। কলার সাহায্যে আপনি ফাটা গোড়ালির যত্ন নিতে পারেন। পাকা কলা মেখে সেটি গোড়ালিতে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তারপর ১০-১৫ মিনিট রেখে পা ধুয়ে ফেলুন, দেখবেন পা ফাটার সমস্যা দূর হয়ে গেছে।
এছাড়াও পায়ে মধুর তেল লাগাতে পারেন। নারকেল তেলের সাথে এক থেকে দুই চামচ মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি ফাটা গোড়ালির ওপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন, তারপর পা ধুয়ে ফেলবেন। এই মিশ্রণটি আপনার পায়ের আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে। এছাড়াও ফাটা গোড়ালির যত্নে আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। দিনে দুই থেকে তিনবার ফাটা গোড়ালি ওপর অ্যালোভেরা জেল লাগান।
এতে আপনার পা ফাটার সমস্যা অনেক বেশি কমে যাবে। পা ফাটার সমস্যা দূর করতে হলে আপনাকে অবশ্যই শীতে মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তবে মশ্চারাইজার ব্যবহারের পর হাঁটাহাঁটি করা হবে না, এতে পায়ে বেশি ময়লা জড়িয়ে যাবে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনাকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। আর এভাবেই ঘরোয়া উপায়ে পা ফাটা দূর করতে পারেন ।
লেখকের শেষ কথা
পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় এবং শীতে পা ফাটা রোধে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টটিতে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায় এবং শীতে পা ফাটা রোধে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনার জ্ঞানভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার তাহলে অবশ্যই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে।
আশা করি আমাদের এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট যদি আপনি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
পায়ের গোড়ালি সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন
